দিনে ডাকাতি খড়্গপুর শহরে সোনার দোকানে, গুলিবিদ্ধ ব্যবসায়ী, গ্রেফতার ৫ দুষ্কৃতি

খড়্গপুর : খড়্গপুর শহরের গোলবাজার এলাকায় সোনার দোকান খুলতেই সশস্ত্র দুষ্কৃতিদের হানা। প্রথমে খদ্দের সেজে ঢুকে দোকান লুঠের চেষ্টা করে ডাকাতদলের। পিস্তল, ভোজালি দেখিয়ে ডাকাতি করার চেষ্টা করলেও বাধা দেয় দোকান মালিক ও কর্মীরা। গুলি চালায় ডাকাতরা। বাধার মুখে পড়ে দোকানের কর্মীকেও ভোজালির কোপ। পরে দোকানের সোনা লুঠ করে ফেরার। খবর পেয়ে পুলিশ তাদের পেছন ধাওয়া করে। জেলার সীমান্ত পেরিয়ে ঝাড়খন্ডে প্রবেশ করার আগেই তাদের গাড়ি ধরে ফেলে পুলিশ। গাড়ি থেকে পালিয়েও রক্ষা হয় নি। শেষে গ্রামের বিভিন্ন স্থান থেকে ৫ ডাকাতকে গ্রেফতার করে ঝাড়গ্রাম পুলিশ। অন্যদিকে গুলিবিদ্ধ ব্যাবসায়ীকে ভর্তি করা হয়েছে মেদিনীপুর হাসপাতালে।
মেদিনীপুর শহরের বাসিন্দা আশীষ দত্ত-র একটি সোনার দোকান রয়েছে খড়্গপুর শহরের গোলবাজার এলাকায়। শুক্রবার বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ তিনি দোকান খুলেছিলেন। ওই সময় খদ্দেরের বেশে কয়েকজন যুবক দোকানে প্রবেশ করে। সেখানে প্রবেশ করে প্রস্তুতি নিতে দেখে দোকানের কর্মীদের সন্দেহ হয়। প্রস্তুতি নেওয়ার আগেই ডাকাতরা বুঝে গিয়ে পিস্তল ও ভোজালি বের করে। শুরু করে লুঠপাঠ ৷ দোকানের কর্মী ও মালিকেরা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে পিস্তুল থেকে দুটি গুলি ছোঁড়ে। যার একটি লাগে দোকানের মালিক আশীষ দত্তের পেটে। অপরটি দোকানের এক কর্মীর হাত ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। ডাকাতেরা দোকান ছেড়ে বেরিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা স্করপিও গাড়িতে চেপে ফেরার হয়। দোকানের কর্মীরা দ্রুত খড়্গপুর টাউন থানার পুলিশকে জানিয়ে গুলিবিদ্ধ আশীষ দত্তকে ভর্তি করে মেদিনীপুর হাসপাতালে। আশীষ দত্ত মেদিনীপুরের স্বর্ণ ব্যবসায়ী তথা তৃণমূলের মেদিনীপুর শহর তৃণমূলের সভাপতি বিশ্বনাথ পাণ্ডবের শ্যালক। ঘটনায় তৃণমূলের বিভিন্ন নেতৃত্ব হাজির হয় হাসপাতালে। তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা জানান, “বিহারের নম্বর প্লেট লাগানো একটি স্করপিও গাড়িতে দুষ্কৃতিরা এসেছিল। লুটের চেষ্টা করেছিল। সেখানে বাধা দিতে গিয়ে এই আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ পুরো বিষয়টি দেখছে।”  অন্যদিকে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশের একটি টিম জাতীয় সড়ক ধরে ঝাড়খন্ডের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেওয়া স্করপিওর পেছন ধাওয়া করে। খবর দেওয়া হয় ঝাড়গ্রাম-ঝাড়খন্ড সীমান্তে থাকা বাহিনীকেও। সীমান্ত সীল করা হয়। ঝাড়গ্রামের পুলিশও হাজির হয়ে যায় গাড়ির পেছনে। গোপীবল্লভপুর এলাকাতে পুলিশের সাথে টক্কর দিতে না পেরে স্করপিও ফেলে রেখে চম্পট দেয় ডাকাতদল। পেছনে ধাওয়া করে দুজনকে ধরে ফেলে পুলিশ। রানটুয়া গ্রামের ভেতরে লুকিয়ে পড়ে বাকি তিনজন। তাদের তল্লাশিতে পুলিশ ড্রোন ওড়ায়। তিনজনের অবস্থান চিহ্নিত করে তাদেরও গ্রেফতার করে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার বলেন, “৫ জন ডাকাতকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। অস্ত্র, গাড়ি উদ্ধার হয়েছে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You cannot copy content of this page