Home Blog জলের হাহাকার! হাতিদের পাড়ি দিতে হচ্ছে পাঁচ কিলোমিটার পথ

জলের হাহাকার! হাতিদের পাড়ি দিতে হচ্ছে পাঁচ কিলোমিটার পথ

27
0

তীব্র দাবদাহে একদিকে যেমন মনুষ্যসমাজে হাহাকার দেখা দিচ্ছে পানীয় জলের, ঠিক অপরদিকে জঙ্গলের পশুদেরও একই অবস্থা। শুকিয়ে গিয়েছে জঙ্গলে থাকা বিভিন্ন জলাশয়গুলি। তাতে সব থেকে সমস্যায় পড়েছে হস্তিকুল। একটি হাতির প্রতিদিন গড়ে ১০০ লিটার পানীয় জল প্রয়োজন। তার বাইরে রয়েছে শরীর ভেজানো। ফলে জলের জন্য পাড়ি দিতে হচ্ছে পাঁচ কিলোমিটারেরও বেশি পথ। কয়েকদিন ধরেই মেদিনীপুর সদরের চাঁদড়ার জঙ্গলে অবস্থান করেছিল ৬০টি হাতির দুটি পাল। জঙ্গলের ভেতরে থাকা জলাশয়গুলিতে অবশিষ্ট জলও শেষ হয়ে গিয়েছে। এবার জল না পেয়ে হস্তিকুল সমাজে হাহাকার দেখা দিয়েছে। সূর্য ডোবার অপেক্ষায় থাকছে তারা। সূর্য ডুবলেই সোজা পাড়ি দিচ্ছে পাঁচ কিলোমিটার দূরে কংসাবতী নদীতে। জঙ্গলে কেন পশুদের জন্য জলের ব্যবস্থা করা হয়নি তা নিয়েও বনদপ্তরের বিরুদ্ধে উঠছে নানা প্রশ্ন। তবে এই গরমের মধ্যে আরও এক ভয়াবহ সমস্যা দেখা দিয়েছে হাতিদের বাসস্থানে। যে জঙ্গলগুলিতে হাতি থাকছে তাতে আগুন লাগিয়ে দিচ্ছে কেউ বা কারা। মেদিনীপুর সদরের ঝরিয়া, শিরষী, চাউলপুড়া সহ বিভিন্ন জঙ্গলে আগুন লাগানোর চিত্র দেখা দিয়েছে। একদিকে জলের জন্য হাহাকার তার উপর আগুনের তাপে বাসস্থান হারিয়ে ফেলছে। পাশাপাশি হাতিদের বিরক্ত করতেও দেখা গিয়েছে বেশকিছু যুবকদের। চাঁদড়া রেঞ্জের আধিকারিক সুজিত পন্ডা বলেন, “ঝাড়গ্রামের কোন এক এলাকা থেকে কয়েকজন যুবক এসে জঙ্গলে ঢুকে হাতিদের উত্ত্যক্ত করছিল বলে খবর পেয়েছি। তাদের চিহ্নিত করার কাজ চলছে।” সারাদিনের তীব্র গরম, জলের হাহাকার, আগুনের লেলিহান শিখার তাপে যখন হাতির পাল অতিষ্ঠ, সেই সময় তাদের এইভাবে উত্ত্যক্ত করলে যে কোন মুহূর্তে বিপদ ঘটতে পারে তা জানাচ্ছেন বন আধিকারিকরা। মঙ্গলবার চিলগোড়ার জঙ্গলে থাকা ৪০টি হাতির পাল পুরো জঙ্গল তছনছ করে খোঁজ চালিয়েছে জলের জন্য। সূর্য ডোবার আগেই জঙ্গল পথে পাড়ি দিল জলের খোঁজে কংসাবতী নদীর উদ্দেশ্যে। সন্ধ্যা হতেই মেদিনীপুর-ঝাড়গ্রাম সড়ক পেরিয়ে চলে যায় কংসাবতী নদীতে। তবে আর ফিরে আসেনি। নদী পেরিয়ে তারা চলে গিয়েছে মানিকপাড়ার রামরামার জঙ্গলে। পেছন থেকে কেউ তাড়া না দিলেও হাতির পালের কংসাবতী নদী যাওয়ার কারণ হিসেবে অনেকেই জলের জন্য মনে করছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, জঙ্গলের বিভিন্ন জলাশয়গুলি মজে গিয়েছে। সেগুলি পুনরায় সংস্কার করে জল ধরে রাখার ব্যবস্থা করুক বনদপ্তর। তবে জঙ্গলে যে জলের সংকট রয়েছে তা মানছেন চাঁদড়া রেঞ্জের আধিকারিক সুজিত পন্ডা। তিনি বলেন, যে সংখ্যক হাতি রয়েছে সেই পরিমাণ জল নেই। ফলে হাতির পাল সন্ধ্যা হলেই চলে যাচ্ছে কংসাবতী নদীতে জলের সন্ধানে।” বনদপ্তর থেকে জানা গিয়েছে চাঁদড়া রেঞ্জের আমগোবরার জঙ্গলে এখনও ১৫টি হাতির একটি পাল রয়েছে।

Previous articleঅবশেষে জেলায় বামেদের হয়ে প্রচারে নামার বার্তা কংগ্রেসের
Next articleমেদিনীপুরে মনোনয়ন জমা দিতে গিয়ে ধস্তাধস্তি বাম-বিজেপির

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here