সন্তানদের পড়াশোনা হচ্ছে না, রেশনের চাল থেকে নতুন জামা-কাপড়, গবাদি পশু সবই বিক্রি করে ফেলছে বাড়ির পুরুষেরা। যার মূল কারণ মদের নেশা। সেই মদ বন্ধের দাবিতে সরব হয়েছিলেন এলাকার মহিলারা। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা শাসক দপ্তরে ডেপুটেশনও দিয়েছিলেন তারা। তাদের দাবি ছিল এলাকায় সমস্ত মদের ভাটি বন্ধ করতে হবে এবং চোলাই কারবারিদের গ্রেফতার করতে হবে। নিজেরাও এলাকায় মদ ভাটি বন্ধের জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে বলে এসেছিলেন। তারপরও চোলাই কারবার বন্ধ হয়নি বলে অভিযোগ। এবার গুড়গুড়িপাল থানায় বিক্ষোভ দেখালেন মেদিনীপুর সদর ব্লকের চাঁদড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের খড়িকাশুলি গ্রামের মহিলারা। মঙ্গলবার মিছিল করে থানায় এসে বিক্ষোভে সামিল হন। পরে ডেপুটেশন দেন। নেতৃত্বে ছিলেন, মহিলা সাংস্কৃতিক সংগঠনের সম্পাদিকা ঝর্ণা জানা। ওই গ্রামের ২০০ টি পরিবারের অধিকাংশই লোধা-শবর। গ্রামে একাধিক চোলাই মদের ভাটি ছিল বলে অভিযোগ। সকাল থেকে রাত বাড়ির পুরুষেরা সেই চোলাইয়ে মত্ত থাকেন। সংসার চালানোর উপার্জন পর্যন্ত করেন না। রেশনের চাল থেকে বাড়ির গবাদি পশু এমনকি নতুন জামা-কাপড় পর্যন্ত বিক্রি করে ফেলছে নেশার খরচ জোগাতে। তাতে বাধা দিলে মারধর করা হচ্ছে বাড়ির মহিলাদেরও। এলাকায় সুস্থ পরিবেশ মদের কারণে নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ মহিলাদের। তবে বেশ কয়েকবার পুলিশ ও আবগারি দপ্তরের অভিযানে অনেকটাই আটকানো গিয়েছে চোলাই কারবার। এবার পাশাপাশি গ্রামগুলিতে গিয়ে নেশায় মত্ত হচ্ছেন ওই গ্রামের পুরুষেরা। মহিলাদের দাবি, খড়িকাশুলি, ভূঁঞাহাতা, ডাইনমারি, বড়ামচাটি, হেতাশোল সহ পাশাপ পাশাপাশি সমস্ত এলাকায় মদ বন্ধ করতে হবে। চোলাই মদের কারবারিদের গ্রেফতারও করতে হবে। ঝর্ণা জানা বলেন, “এর আগেও পুলিশকে জানানো হয়েছিল। জেলা শাসক দপ্তরেও ডেপুটেশন দেওয়া হয়েছে। তারপরেও বিভিন্ন এলাকায় চলছে রমরমিয়ে চোলাই কারবার। পুলিশ এবং আবগারি দপ্তর মাঝে মধ্যে অভিযানে গিয়ে চোলাই মদ নষ্ট করলেও কাউকে গ্রেফতার করেনি। উল্টে চোলাই কারবারিরা প্রতিবাদী মহিলাদের হুমকি দিচ্ছে।” তবে পুরোপুরি মদ বন্ধ না হলে বিভিন্ন এলাকার মহিলারা সমবেত হয়ে পথ অবরোধ করবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে।