অ্যাম্বুলেন্স-লরির মুখোমুখি সংঘর্ষ! মৃত্যু ৬ জনের

মেদিনীপুর থেকে কেশপুরের দিকে যাচ্ছিল একটি সিমেন্ট বোঝাই লরি। অন্যদিকে ঘাটাল থেকে রোগী নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে করে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের উদ্দেশ্যে আসছিলেন চালকসহ ৮ জন। শুক্রবার রাত বারোটা নাগাদ মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুর থানার অন্তর্গত পঞ্চমী এলাকায়। প্রচন্ড জোরে ওই সংঘর্ষে অ্যাম্বুলেন্সকে ধাক্কা মেরে অনেকদূর পর্যন্ত টেনে নিয়ে যায় লরিটি। প্রাণ হারায় অ্যাম্বুলেন্সে থাকা ৬ জন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন আরো দুজন। তাদের মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রাতেই ঘটনাস্থলে হাজির হন পুলিশ সুপারের ধৃতিমান সরকার সহ পুলিশ কর্তারা। পরে হাসপাতালে হাজির হন অন্যান্য আধিকারিকরাও। জানা গিয়েছে,  চন্দ্রকোণার ক্ষীরপাই পৌরসভার কাশিগঞ্জের বাসিন্দা শ্যামাপদ বাগ একমাস আগে বিয়ে করেন কেশপুরের নেড়াদেউলের ভগবানচক এলাকার অপর্ণা র সাথে। হঠাৎ করে কয়েকদিন আগে শ্যামাপদের স্ত্রী অপর্ণার পেটের যন্ত্রনা শুরু হলে প্রথমে তাকে ক্ষীরপাই গ্রামীণ হাসপাতাল পরে ঘাটাল হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। শনিবার গভীর রাতে ঘাটাল হাসপাতালে অপর্ণার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে রাতেই তাকে স্থানান্তরিত করা হয় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। অ্যাম্বুলেন্সে করে অপর্ণার স্বামী  সহ শ্যামচক গ্রামের  বাপের বাড়ি সদস্যরা অপর্ণাকে মেদিনীপুরের উদ্দেশ্যে নিয়ে য়াওয়ার সময় পঞ্চমীর কাছে ঘটে মর্মান্তিক  ঘটনা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ছয় জনের। তাদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে অপর্ণা ও অ্যাম্বুলেন্স চালক। ক্ষীরপাই এলাকায় খবর পৌঁছালে এলাকা জুড়ে দেখা দিয়েছে শোকের ছায়া।
জানা গিয়েছে, ঘাটাল হাসপাতালে পেটের যন্ত্রনা নিয়ে ভর্তি ছিলেন ক্ষীরপাই এলাকার ওই মহিলা। তাকে নিয়ে আরো দুই মহিলা সহ পাঁচজন পুরুষ যাচ্ছিলেন মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। কেশপুর এলাকার পঞ্চমী দিয়ে তারা যখন যাচ্ছিলেন তখন উল্টো দিক থেকে একটি ১৬ চাকার লরি প্রচন্ড গতিতে একটি ব্রিজ থেকে নামছিল। ব্রিজ থেকে নামার সময় লরির আলো উল্টো দিকে নিচু অংশে রাস্তায় চোখে পড়ে অ্যাম্বুলেন্স চালকের। দুজনেই গতিতে থাকা অবস্থায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা বুঝতে পেরে দ্রুত এসে উদ্ধার করার কাজ শুরু করে রাতেই। পরে সেখানে হাজির হয় কেশপুর থানার পুলিশ। মেদিনীপুর থেকে যান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সহ জেলা পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার ও অন্যান্য আধিকারিকরা। ঘটনাস্থলেই চারজনের মৃত্যু হয়। আশঙ্কা জনক অবস্থায় আরও চারজনকে উদ্ধার করা হয়। তাদের নিয়ে যাওয়া হয় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। সেখানে আরো দুজনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসক। মৃতদের মধ্যে পুরুষ মহিলা সকলেই ছিলেন। তবে একমাত্র ওই রোগিনী মহিলা ও পুরুষ অ্যাম্বুলেন্স চালক ছাড়া সকলেই মারা গিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You cannot copy content of this page